আমেরিকার ৩৯তম প্রেসিডেন্ট প্রয়াত জিমি কার্টার। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গত অক্টোবর মাসে তাঁর শততম জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন তিনি। জিমি কার্টার আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘজীবী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। ২০০২ সালে, শান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে সম্মানিত হন।
জিমি কার্টারের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল তার নিজ দেশ জর্জিয়া প্রদেশে, যেখানে তিনি গভর্নর ছিলেন। এর আগে, তিনি জর্জিয়া স্টেট সেনেটের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৬ সালের নির্বাচনে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তাঁর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর, তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ রোনাল্ড রেগনের কাছে পরাজিত হওয়ার পর, তিনি হোয়াইট হাউস ছেড়ে দেন, তবে তার প্রভাব বিশ্বজুড়ে অটুট ছিল।
চলতি বছরের ৩০শে ডিসেম্বর নতুন চমক আনতে চলেছে ইসরো
একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও, বিশেষ করে ১৯৭৯ সালে ইরান বিদ্রোহের সময়, যখন তিনি মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের উদ্ধারে ব্যর্থ হন, তখনও তাঁর নেতৃত্বে ইসরায়েল এবং মিশরের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই উদ্যোগের জন্য তিনি ইতিহাসে স্থান পেয়ে থাকেন। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল শান্তির জন্য তাঁর অবিচল প্রচেষ্টা। এই কারণে, ২০০২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার পরও, ‘কার্টার সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করে তিনি দারিদ্র্য, রোগ প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার বিষয়ে কাজ চালিয়ে গেছেন। তাঁর এই কর্মকাণ্ডই তাঁকে বিশ্ববাসীর কাছে এক অনন্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কার্টারের ব্যক্তিগত জীবনও ছিল প্রেরণাদায়ক। ১৯৪৬ সালে রোজালিন স্মিথের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের তিন ছেলে এবং এক কন্যা রয়েছে। রোজালিন ২০২৩ সালে প্রয়াত হন, আর তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত কার্টার মাত্র ১১ মাস পরেই চলে যান। গত কয়েক বছর ধরে তিনি মেলানোমা নামক ক্যান্সারে ভুগছিলেন, যা পরে তার লিভার এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি বয়সজনিত বিভিন্ন অসুখেও তিনি ভুগছিলেন।
বিশ্ব রাজনীতির দীর্ঘ পথচলায় জিমি কার্টার একজন প্রেরণাদায়ী নেতা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর জীবন ও কাজ, শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান, এবং মানবাধিকার রক্ষায় তাঁর অটল মনোভাব অনুপ্রেরণা দেবে বহু প্রজন্মকে।