আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনকালের অবসান হলো সিরিয়ায়। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের অবসান হতেই তৎপরতা শুরু করল আমেরিকা। মধ্য সিরিয়ায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে তারা প্রায় ৭৫ টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
প্রসঙ্গত, একাধিক সংবাদ সংস্থার সুত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার দামাস্কাস ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তবে তিনি কোথায় পালিয়েছেন, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে গত রবিবার সকাল থেকে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের বড় অংশ চলে যায় বিদ্রোহী বাহিনী দখলে। এর পর পালাতে এক প্রকার বাধ্য হন বাশার। এর পরই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ঘোষণা করে, ‘দামাস্কাস এখন আসাদ-মুক্ত’। সেখানকার বিরোধীরাও একই ঘোষণা করেছে।
উলেখ্য, মার্কিন বিমান বাহিনীর B-52, F-15 এবং A-10 সহ অনেক বোমারু বিমান আইএসআইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। রবিবার সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেন, আসাদ সরকারের পতন মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মুহূর্ত। বাইডেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, 'আইএসএইএস' যদি সিরিয়ার পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা তা হতে দেব না'।
প্রসঙ্গত, আশ্চর্য জনকভাবে অগাস্টে বাংলাদেশে যেই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল সেই একেই পরিস্থিতি দেখা গেল সিরিয়ায়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার সময় তার বাসভবনে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করে ঠিক তেমনিই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসভবনে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে বেশকয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি, মোটর সাইকেল, সাঁজোয়া নিয়ে গিয়েছে বিদ্রোহীরা। এছারাও, দামি দামি জামাকাপর, ঘর সাজানোর জিনিস ইত্যাদি নিয়েনিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
সিরিয়ার প্রাইম মিনিস্টার মহম্মদ ঘাজ়ি আল-জালালি জানিয়েছেন, তিনি নতুন সরকারকে সমর্থন করতে প্রস্তুত। সিরিয়ার মানুষ যাঁকে নেতা হিসাবে সমর্থন করবে তাঁকে মেনে নিতে তিনি রাজি। তবে তিনি যে দেশ ছেড়ে চলে যাবেন না, সে কথাও স্পষ্ট করেছেন। ১৯৭১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন হাফেজ় আল-আসাদ। তখন থেকেই সিরিয়ায় ‘আসাদ যুগের’ শুরু হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর ২০০০ সালে মসনদে বসেছিলেন বাশার। অর্থাৎ প্রায় পাঁচ দশক করে আসাদ পরিবার বসে রয়েছেন সিরিয়ার তখতে। এই সময়কালে একাধিক ডামাডোলের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সিরিয়ায়। ২০১১ সালে প্রথম বাশারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমেই ২০২৪ সালে শেষ লগ্নে এসে সিরিয়ায় অবসান হলো আসাদ রাজত্বের।