স্বাভাবিক ভাবে সন্তানধারণে কোনও দম্পতি অসমর্থ হলে অন্যতম হাতিয়ার টেস্ট টিউব শিশু। এই প্রক্রিয়ায় স্ত্রীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয় এবং স্বামীর শরীর থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়। তার পর সেই শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষেক গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে করা হয়।
মাত্র আড়াই বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন টেস্ট টিউব বেবির স্রষ্টা প্রয়াত ডাক্তার সুভাষ মুখোপাধ্যায়। তাঁরই অন্যতম সহযোগী ডাঃ সুদর্শন ঘোষদস্তিদারকে নিখরচায় টেস্ট টিউব বেবির জন্মদানের দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। এসএসকেএম হাসপাতালের শিশু বিভাগের পাশেই দ্রুত গড়ে ওঠে বন্ধ্যাত্ব দূর করার এই বিভাগ। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে টেস্ট টিউব বেবি সৃষ্টির জন্য বিশ্বমানের চিকিৎসা পরিকাঠামো বসিয়ে দেন মুখমন্ত্রী। অথচ পরিষেবা পেতে নামমাত্র খরচ করতে হবে।
শহরে নিঃশব্দে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিপ্লব, বাংলার সরকারি হাসপাতাল SSKM-এ দ্বিতীয়ার দিন জন্ম নিল টেস্ট টিউব বেবি। দেশে এই প্রথম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সম্পন্ন হল এই প্রক্রিয়া। সুস্থ রয়েছেন মা ও শিশু।
এসএসকেএম হাসপাতালের এই বিভাগ চালু হওয়ার পরই জেলা থেকে একে একে আসতে শুরু করে গরিব দম্পতিরা। কারণ, বেসরকারি হাসপাতালে একবার টেস্ট টিউব ভ্রূণ তৈরিতে খরচ হয় প্রায় আড়াই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা। যা অনেকেরই সাধ্যের মধ্যে। শুক্রবার রাতে ডাক্তার সুদর্শন ঘোষদস্তিদার জানিয়েছেন, “ভারতে এই প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনা খরচে টেস্ট টিউব বেবি জন্ম নিল। আগামীতেও সবাই এভাবেই বিনা খরচে সন্তানের মুখ দেখতে পারবেন স্রেফ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে।” এই শিশুকে নিয়ে মা-বাবা যেমন খুশি, তেমনই উচ্ছ্বসিত হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সরা। বাংলার চিকিৎসা জগতে এ এক ইতিহাসই বটে!