#Pravati Sangbad Digital Desk:
এই বছরের এপ্রিল মাসই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। স্বাভাবিক-এর তুলনায় অনেকটাই বেশি এপ্রিল-এর তাপমাত্রা। চল্লিশের ঘরেই ঘোরাফেরা করছে বাংলার তাপমাত্রা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে যাচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। তীব্র গরমের সাথে রয়েছে তাপপ্রবাহ। তাই অতিরিক্ত উষ্ণ পরিবেশে বাড়ির বাইরে না বেরোনোটাই ভালো। কিন্তু কাজের তাগিদে বহু মানুষকেই প্রতিদিন বাড়ির বাইরে বের হতে হয়। আর বাড়ির বাইরে যারা যান তারাই বোঝেন কত রকম সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। প্রচন্ড গরমে নানা ধরনের রোগ ও দেখা দেয়। যেগুলির মধ্যে একটি ভয়াবহ প্রাণঘাতী রোগ হলো হিট স্ট্রোক।প্রতি বছর এই রোগের কবলে পড়ে প্রচুর মানুষের মৃত্যুও হয়। এই রোগ আসলে একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সী। অর্থাৎ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই রোগ সম্পর্কে অধিক সচেতন থাকা দরকার। এই হিট স্ট্রোক আসলে কি? অতিরিক্ত গরম পরিবেশে থাকলে যখন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনাইট এর বেশি হয়ে যায়, তখন শরীরের সেই অবস্থাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক। অতিরিক্ত গরমে বাড়ির বাইরে দীর্ঘক্ষণ থাকলে বা কোনো ভারী কাজ করলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। কোনো ব্যক্তির হিট স্ট্রোক হলে তার শরীরে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন-
* শরীর খুব ঘামতে শুরু করে।
* গলা শুকিয়ে যায়। খুব জল তেষ্টা পায়।
* মাংস পেশীতে ব্যথা ও যন্ত্রণা অনুভূত হয়।
* পেশিতে খিচুনি ধরে।
* শরীর দূর্বল লাগে।
* নিশ্বাস দ্রুত হয়।
* প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। প্রস্রাবের রঙ হলুদ বা গাঢ় হয়ে যায়।
* রোগী অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।
* হ্যালুসিনেশন করে।
* অজ্ঞান ও হয়ে যেতে পারেন।
করণীয় : যেহেতু এটি একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সী। তাই কারোর ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলি দেখা গেলে খুব দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করা দরকার। সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে প্রথমে ওই ব্যক্তিকে রোদ থেকে সরিয়ে কোনো ছায়া জায়গাতে নিয়ে যেতে হবে। বা কোনো বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে ফ্যান বা এসি চালিয়ে দিতে হবে। ব্যক্তির জামা কাপড় যতটা সম্ভব আলগা করতে হবে। তার মুখে, চোখে, ঘাড়ে,গলায় ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে হবে। একটু জল খাওয়াতে হবে ও তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। হিট স্ট্রোক যাতে না হয় তার জন্য আগাম কিছু সতর্কতা পালন করা যেতে পারে। যেমন-
* প্রচন্ড গরমে সবসময় হালকা ও ঢিলে ঢালা সুতির জামা কাপড় পরতে হবে।
* প্রচুর পরিমাণে জল ,ফলের রস , ও এর এস পান করতে হবে।
* সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা অবধি বাড়ির বাইরে না যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
* অতিরিক্ত গরমে রোদের সময় বা দুপুরের দিকে কোনো ভারী কাজ করা যাবে না।
* প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি খেতে হবে।
* তেল মশলা যুক্ত খাওয়ার খাওয়া যাবে না।
* রোদে বেরোনোর ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন মাখতে হবে।
* বাড়ির বাইরে বেরোলে সবসময় সাথে খাওয়ার জল নিয়ে বেরোতে হবে।
* রোদে বেরোলে যতটা সম্ভব গা হাত ঢেকে বেরোতে হবে। ওড়না ,টুপি , ছাতা,রোদ চশমা ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।