#Pravati Sangbad Digital Desk:
ভারতে ট্রেন পরিষেবা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। দূরে কোথাও যাওয়ার জন্য মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে খরচে কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যায় এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে। সর্বস্তরের মানুষ এই রেল পরিষেবা স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারেন। আর এই রেল পরিষেবা উন্নতিকরনের কাজে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে ভারতীয় রেল। ভারতীয় রেল এদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় মেরুদণ্ড। ভারতীয় রেল আছে বলেই লাখ লাখ মানুষ কম খরচে অনেকটা রাস্তা পাড়ি দিতে পারেন। যাত্রী হোক বা মাল পরিবহণ, ভারতীয় রেলে খরচ সব সময়ই কম। নামমাত্র টাকার টিকিট কেটে অনেক পথ পাড়ি দেওয়া যায়। ভারতীয় রেল এদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ভরসার আরেক নাম। ভারতীয় রেল সাধারণ মানুষের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা দিয়ে থাকে। আপনি শুনলে অবাক হবেন যে ভারতে একটি ট্রেন রয়েছে যাতে ভ্রমণ করতে কোনোরকম টিকিট কাটতে হয় না এবং ট্রেনের জন্য নেই কোনো টিটি। কোথায় চলে এই ট্রেন?
বিনামূল্যে চলা এই ট্রেনটি পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের সীমান্তে চালানো হয়। এতে যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো ভাড়া নেওয়া হয় না। এই ট্রেনটির নাম ভাকরা-নাঙ্গল ট্রেন। আসলে, এই ট্রেনটি ভাকরা ম্যানেজমেন্ট বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ট্রেনটি ভাকরা এবং নাঙ্গলের মধ্যে চলে এবং ১৩ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। ভাকরা-নাঙ্গল ট্রেনটি সুতলজ নদী এবং শিবালিক পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্ব-বিখ্যাত ভাকরা-নাঙ্গল বাঁধটি সর্বোচ্চ সোজা মাধ্যাকর্ষণ বাঁধ হিসাবে বিখ্যাত এবং এটি দেখতে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসেন। এই বিশেষ ভাকরা-নাঙ্গল ট্রেনটি শুধুমাত্র এই পর্যটকদের জন্য চালানো হয়। ভাকরা-নাঙ্গল বাঁধ দেখতে আসা সকলেই এই ট্রেনে বিনামূল্যে ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন।
ইতিহাসের দিকে চেয়ে দেখলে এই ট্রেনটি প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। এটি প্রথমে ছিল একটি বাষ্প ইঞ্জিনের ট্রেন। বর্তমানে এটিকে ডিজেল চালিত করা হয়েছে। আগে এই ট্রেনে ১০টি বগি ছিল, কিন্তু এখন তা কমিয়ে এই ট্রেনে মাত্র ৩টি বগি ব্যবহার করা হয়। এই ট্রেনের বিশেষত্ব হল এর কোচগুলো কাঠের তৈরি এবং পাহাড় কেটে তৈরি করা ট্র্যাকে চলে। আর্থিক পরিস্থিতির কথা ভেবে একবার এই ট্রেনের ফ্রি সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার কথা উঠলেও, ভাকরা ব্যাস ম্যানেজমেন্ট বোর্ড এটিকে আয়ের উত্স হিসাবে বিবেচনা না করে উত্তরাধিকার হিসাবে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই ট্রেন সতলজ নদীর পাড় ধরে চলে। আবার শিবালিক-এর পাহাড়ের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারেন যাত্রীরা। ৭৩ বছর ধরে চলছে এই ট্রেন। মাঝে ঠিক করা হয়েছিল, এই ট্রেনে টিকিট চালু করা হবে। তবে তা শেষমেশ আর হয়নি।