#Pravati Sangbad Digital Desk :
বাংলা চলচ্চিত্রের অন্নদাতা বলা হত অঞ্জন চৌধুরীকে। তাঁর লেখা চিত্রনাট্যেই হাউসফুল হত বাংলা ছবির সিনেমাহল। আটের-নয়ের দশকের সুপারহিট পরিচালক তিনি। প্রয়াত হন ২০০৭ সালে। কয়েক মাস আগেই প্রয়াত হন তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী চৌধুরী। আজ চলে গেলেন তাঁদের পুত্র সন্দীপ চৌধুরী। বাবার মতোই পরিচালক ছিলেন তিনি। একাধিক সিনেমা এবং মেগা সিরিয়ালে পরিচালনা করেছেন তিনি। তাঁকে 'বাবু' নামেই চিনতেন ইন্ডাস্ট্রির সবাই।
শহরের এক বেসরকারী হাসপাতালে আজ শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷ বেশ কিছুদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি, পাশাপাশি বেশ কিছু সমস্যাও ছিল তাঁর৷
গুরুদক্ষিণা’, ‘বড় বউ’, ‘ছোট বউ’, ‘নবাব’, ‘লোফার’-এর মতো সিনেমার মাধ্যমে বাংলা সিনেমার দর্শকদের মন জয় করেছিলেন অঞ্জন চৌধুরী। বাবার পথ অনুসরণ করেই পরিচালনার জগতে আসেন সন্দীপ চৌধুরী। ‘এরাও শত্রু’র মতো মেগা সিরিয়ালের পরিচালনা করেছিলেন পরিচালক সন্দীপ। এছাড়াও, ‘উড়ন তুবড়ি’ ধারাবাহিকের সৃজনশীল পরিচালকও ছিলেন। এছাড়াও ‘কন্যাদান’ ধারাবাহিকের সংলাপের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও জিতু কমলকে নিয়ে ‘বিদ্রোহিনী’ ছবির ঘোষণাও করেছিলেন সন্দীপ চৌধুরী। এ ছাড়াও টুকটাক ছবির পরিচালনাও করেছেন অঞ্জন-পুত্র। তবে সেই ছবিগুলি আহামরি জনপ্রিয়তা পায়নি। আর সেই কারণেই বাঙালির ঘরে ঘরে অতি পরিচিত হয়ে ওঠা হয়নি সন্দীপের। আরও বেশ কয়েকটি গল্প নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল সন্দীপের। কিন্তু শেষমেশ তা আর হয়ে ওঠেনি। ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক পরিচালনার কাজেই মন দিয়েছিলেন সন্দীপ।
সন্দীপ চৌধুরী পরিচালনার কাজে যুক্ত থাকলেও তাঁর শারীরিক অসুস্থতা ছিলই। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি পড়ত তাঁর। এছাড়াও ছিল লিভারের সমস্যা। খাবারের প্রতিও সন্দীপের অতিরিক্ত আসক্তি ছিল, যার ফলে লিভারের সমস্যা বেড়েই চলে। মানসিক টানাপড়েনেও থাকতেন অঞ্জন-পুত্র। বেহালার বাড়িতেই স্ত্রী বিদিশা চৌধুরীকে নিয়ে সন্দীপ থাকতেন। জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে সিরিয়ালের সেটেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্দীপ চৌধুরী। ৪৪ বছরের পরিচালককে ইকবালপুরের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। পরিবারসূত্রে খবর, তাঁর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি জনিত সমস্যা ছিল। পাশাপাশি লিভারের সমস্যাতেও ভুগছিলেন তিনি। সন্দীপ অত্যন্ত ভোজনরসিকও ছিলেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে চিকিৎসকরা খাবার দাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা বললেও তিনি তা শুনতেন না। ফলে তাঁর লিভারের সমস্যাও বাড়ছিল। মঙ্গলবার পরিচালকের প্রয়াণের খবর জানা যায়। প্রাথমিক কারণে মনে করা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মারা যান তিনি।