#Pravati Sangbad Digital Desk:
করোনার মত হাম একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ অতি দ্রুত ছড়ায়। শিশুদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ, জটিলতা ও মৃত্যু বেশি দেখা যায়। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অপুষ্টি, এনকেফালাইটিস, অন্ধত্ব ও বধিরতা অন্যতম। হামের মতো রুবেলাও ভাইরাসজনিত অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ। এটিও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায়। গর্ভবতী মায়েরা গর্ভের প্রথম তিন মাসে রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে মা থেকে গর্ভের শিশু আক্রান্ত হতে পারে। সেই কারণে এইবার শিশুস্বাস্থ্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ দফতরের তরফে রাজ্যের সমস্ত স্কুলে নিখরচায় দেওয়া হবে হাম ও রুবেলার টিকা । ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের এই টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । তবে আগে থেকে কোনও গুরুতর অসুখ থাকলে, হাসপাতালে চিকিৎসা চললে, ধুম জ্বর থাকলে বা অ্যালার্জি ধাত থাকলে টিকা নেওয়া যাবে না। কোনওরকম ক্রনিক রোগের ওষুধ চললে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তরাবাবুরা বলছেন, হাল্কা খাবার খেয়ে আসতে হবে টিকা নিতে। স্কুল বা টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতে গিয়ে টিকার ডোজ নিতে হবে। টিকা নেওয়ার পরে হাল্কা জ্বর আসতে পারে, তবে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে। কোনও ভয়ের ব্যাপার নেই।
এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, সমস্ত স্কুলে এই টিকা যেমন দেওয়া হবে তেমনই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্কুলছুট, ড্রপ আউট, পরিযায়ী শিশু, হোম, শেল্টার, পথশিশুদের টিকা দেওয়া হবে। বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে চা বাগান, ইঁট ভাটা, আদিবাসী এলাকা, প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায়। জেলাশাসকের নেতৃত্বে ডিস্ট্রিক্ট কোর গ্রুপ গঠন করা হবে। যার মধ্যে থাকবেন পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, বেসরকারি চিকিৎসক, নার্সিং হোম, বেসরকারি স্কুলের প্রতিনিধিরা। এই কোর গ্রুপ রূপরেখা তৈরি করবে। সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও বিনা পয়সায় মিলবে এই ভ্যাকসিনগুলি। পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হুগলি, হাওড়া ছাড়াও রাজ্যের সব জেলাতেই ঠিক সকাল ৯টায় এই কর্মসূচি শুরু করা হয়। চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে সকাল ১১ টায় জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে প্রথম ন’মাসের এক শিশুকে টিকা দেওয়া হয়। এরপর ১৫ বছরের এক কিশোরীকে এই টিকা দেওয়া হয়। হুগলি জেলায় প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে এই টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারী।
কর্মসূচির সূচনা করেন মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকেও এই টিকা দেওয়া হবে। সঙ্গেই মাইকে প্রচার করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা হবে সবাই যেন এসে এই টিকা গ্রহণ করে। টিকাকরণ চলাকালীন যেকোনও রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পথ শিশুদেরও এই টিকার আওতায় আনা হবে। কোভিডের জন্য দু'বছর কিছুটা কম ছিল। এবার নির্দিষ্ট বয়সের সবাইকে বাধ্যতামূলক ভাবে এই টিকা দেওয়া হবে।