Flash News
    No Flash News Today..!!
Tuesday, November 11, 2025

অবশেষে আড়াই বছর পর ভবঘুরে পেল তার বাড়ির সন্ধান

banner

journalist Name : Srimita Sasmal

#Pravati Sangbad Digital Desk:

সালটা তখন ২০২০। চারিদিকে চলছে কভিড এর ভয়াবহতা। লকডাউন ,করোনা, হাসপাতাল ...পৃথিবীটা যখন মুহূর্তের মধ্যে থমকে গিয়েছে সেই সময় পথভোলা এক ছেলে হরিয়ানার নিজের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। হরিয়ানা স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে প্রায় কয়েকশো কিলোমিটার দূরে অজানা রাস্তায় পাড়ি দেয়। আর এসে পৌঁছায় কলকাতায়। তারপর থেকে কলকাতাতেই থাকা, স্টেশনে দিন কাটানো। এভাবেই চলেছে গত আড়াই বছর। বছর ৩২ এর এই ছেলেটির নাম বিজয় কুমার। প্রথমবার যখন সে কলকাতায় এসে পৌঁছায় এসে নেমেছিল স্যার গুরুদাস ব্যানার্জি হল্ট স্টেশনে। তারপর থেকে সেখানেই থাকা শুরু করে। কলকাতায় প্রথম যখন সে এসে পৌঁছায় মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া, ঝাঁকড়া চুল, অযত্নে বেড়ে ওঠা দাড়ি, মুখটা উস্কোখুস্কো। সারাদিন স্টেশনে বসে নিজের মনে বকবক করতো। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম প্রথম তাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে কিন্তু ধীরে ধীরে তারাও বুঝে যায় ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তারাই তার ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করেন। বারবার তাকে যখন কেউ জিজ্ঞেস করত তার বাড়ি কোথায় শুধুই হা করে চেয়ে থাকতো বিজয়।বাড়ির ঠিকানা মনে করতে পারত না সে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তার জন্য খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে ।তার বাড়ির জন্য আশেপাশের এলাকায়ও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। এরপর তারা তাকে একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দেয় এবং সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ছেলেটিকে বেলেঘাটার একটি সরকারি হোমে রাখা হয়। সেখানে শুরু হয় তার চিকিৎসা। এরপর ওই হোমই পশ্চিমবঙ্গের রেডিও ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাকে তার বাড়ি ফেরানোর জন্য রেডিও ক্লাবকে অনুরোধ জানায়।

দীর্ঘ চিকিৎসায় আস্তে আস্তে শারীরিক উন্নতি হলে ছেলেটি ধীরে ধীরে মনে করে বলতে পারে তার বাড়ি হরিয়ানায় এরপর হরিয়ানার কয়েকটি জায়গার নামও বলে সে। এরপরে ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বলেন," কিছুটা সুস্থ হতেই সে হরিয়ানার কয়েকটি জায়গার নাম বলেছিল এরপরই আমরা তার বাড়ির খোঁজে হরিয়ানায় চলে যাই। সেখানে কয়েক দিন তল্লাশির পর জানা যায় ওই যুবকের বাড়ি রোহতকে ।তার বাড়ি থেকে পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি ও করা হয়েছিল।" স্টেশনে বসে থাকার সময় ছেলেটি প্রায়ই চক নিয়ে ইট বা মাটিতে জটিল অংকের ফর্মুলা লিখতো। আবার স্টেশনের কাছাকাছি কচি কাচাদের পেয়ে গেলে তাদের নিয়ে অংক করাতে বসতো। তাদের সাথে কথা বলতো আধা আধা হিন্দিতে। অঙ্কের ফর্মুলা বোঝাত। আর কেউ তার বাড়ির সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করতে এলে সে তাদের এড়িয়ে দূরে বসে থাকতো। অম্বরীশ আরও জানান," তার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে ছেলেটির নাম বিজয় কুমার। অঙ্কে এমএসসি পাস করেছে সে। তবে কোনদিনই চাকরি না জোটাতে পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। তারপর ধীরে ধীরে তার ব্যবহারে অসংলগ্নতা দেখা যায়। এর আগেও বহুবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে সে। আম্বরিশ আরও বলেন, আইনি নিয়ম মেনেই বিজয়কে তার বাড়ি ফেরানো হবে। মঙ্গলবার রাতেই বিজয়ের ভাই কলকাতায় আসে ।বিজয় তাকে চিনতে পেরেছে এবং এখন তার চিকিৎসা ও চলবে।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

দেশ
Related News