৫০০ টাকার বিনিময়ে শিশুর ডেথ সার্টিফিকেট দিলেন ডাক্তার

banner

journalist Name : Sampriti Gole

# Pravati Sangbad Digital Desk:

আনন্দপুরে তিন বছরের শিশু খুনের ঘটনায় স্থানীয় চিকিৎসক ৫০০ টাকার বিনিময়ে ডেথ সার্টিফিকেটে 'নিউমোনিয়া' লিখে দিয়েছে। তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের নাম বি বর্ধন। তিনি ওই এলাকায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। চিকিৎসকের বয়স প্রায় সত্তর বছর। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত বাবাকে। ধৃতকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ছেলের বয়স মাত্র ৩। একা একা বাথরুমে যেতে ভয় পাচ্ছিল। বাবাকে বলেছিল, তার সঙ্গে যেতে। কিন্তু বাবা তো সেই সময় মদ খেতে ব্যস্ত। বাচ্চার আবদারে রীতিমতো বিরক্ত হচ্ছিলেন তিনি। তাই বলে, বিরক্তির এমন ভয়ঙ্কর বহিঃপ্রকাশ ! অভিযোগ, বিরক্ত হয়ে সন্তানকে এমন চড় মারেন বাবা, যে শিশুটি ছিটকে গিয়ে ধাক্কা খায় বাথরুমের দেওয়ালে। সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞান হারায় সে। বাবার মারেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। খুনের একসপ্তাহের মাথায়, আনন্দপুরে ৩ বছরের শিশুর রহস্যমৃত্যুর কিনারা করল পুলিশ। শিশুর বাবা, বিজয় বড়ালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত অবশ্য দাবি করেছে, 'আমি খুন করিনি।' পুলিশ সূত্রে খবর, গত রবিবার আনন্দপুরের নোনাডাঙার বাসিন্দা রোহন বড়াল নামে তিন বছরের এক শিশুর রহস্যমৃত্যু হয়। প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁদের কাছে শিশুর বাবা জানান খেলতে খেলতে বাথরুমে জল ভর্তি বালতির মধ্যে পড়ে যায় শিশুটি। বালতির জলে ডুবে মৃত্যু হয় রোহনের। মৃতের বাবা আরও জানান, দুর্ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। শিশুর মা সেই সময় কাজে বেরিয়েছিলেন। স্ত্রীকেও তিনি ফোনে জানান, শৌচাগারে জলের বালতিতে পড়ে ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় শিশুর মৃত্যুতে বাবা এতটাই কাতর হয়ে পড়েন যে শিশুর ব্যবহৃত কম্বল, বালিশ, গায়ে মাখার তেল, বাটি, এমনকি বালতি পর্যন্ত একটি পুকুরে ফেলে দেন। এরপর সোমবার সকালে সমাধিস্থ করা হয় ৩ বছরের শিশুটিকে। অদ্ভুতভাবে সোমবার থেকে বেপাত্তা হয়ে যান শিশুর বাবা ও মা। তাঁদের মোবাইল ফোনও ছিল বন্ধ। এতেই সন্দেহ হয় শিশুর দিদার। নিছক দুর্ঘটনা নয়, শিশুটিকে খুন করা হয়েছে! পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ জানান তিনি।
এরপরই, খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে আনন্দপুর থানার পুলিশ। আদালতের নির্দেশে, গত বৃহস্পতিবার, কবর থেকে তোলা হয় শিশুর দেহ। পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানা যায়, শিশুর দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এরপরই শিশুর মা-বাবার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। মোবাইল ফোনের টাওয়াল লোকেশনের সূত্র ধরে শনিবার সকালে তিলজলা থেকে বিজয় বড়াল ও তাঁর স্ত্রীকে পাকড়ও করে পুলিশ। এরপর, ১১ ঘণ্টার টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতেই ভেঙে পড়েন অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে দাবি, অভিযুক্ত জানান, বিরক্ত হয়ে ছেলেকে চড় মারেন তিনি। তার জেরে দেওয়ালে সজোরে ধাক্কা লেগে, মৃত্যু হয় তার। বাচ্চাকে ওই অবস্থায় রেখেই ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে যান বিজয়। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই গল্প ফাঁদেন তিনি। এদিকে, শিশুর ফেলে দেওয়া সামগ্রী পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, বালতির যা মাপ, তাতে ডুবে ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এরপরই সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। পুলিশের ধারণা, তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্যই শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রী পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এরপরই, খুনের অভিযোগে, বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু চিকিৎসক কেন বুঝতে পারলেন না শিশুটিকে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে ধন্ধে তদন্তকারীরা। ওই চিকিৎসককেও গ্ৰেপ্তার করা হতে পারে। এক পুলিশ কর্তার কথায়, "ওই চিকিৎসক প্রবীণ। তাই সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত প্রমাণ নথি সংগ্ৰহের পরেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। " 

#Source: online/Digital/Social Media News   # Representative Image



Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

অপরাধ
Related News