#Pravati Sangbad Digital Desk:
সামাজিক বর্বরতা বা পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ থেকে ভারত প্রায় অনেকটাই বেরিয়ে এসেছে। অতীতে জানলার খড়খড়ির অন্তরালে থেকে যাওয়া মেয়েরা এখন আকাশ ছুঁয়েছে। আধুনিক আর শক্তিশালী হয়েছে নারি, উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা, সমাজের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে পুরুষ নারি উভয়েই এক, দুজনেই সমান, কেউ কারোর ওপরে নয়। তবুও কোথাও যেন একটা খামতি থেকে গিয়েছিল। পুরুষদের বিবাহের নুন্যতম বয়স ২১ হলেও পিছিয়ে ছিল মেয়েরা, তাদের বিবাহের নুন্যতম বয়স ছিল ১৮। এর জন্য অনেক মেয়েই বাড়ির চাপে তাদের স্বপ্ন নিজে হাতেই ভেঙ্গে দিতে হয়েছে, কিন্তু আর নয় বিয়ের ক্ষেত্রেও পুরুষ নারি সমান। খুব তাড়াতাড়ি বিবাহের বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করা হবে, এমনই পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।
২০২০ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন মঞ্চে উঠে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখেই প্রথম শোনা গিয়েছিল এমন কথা, জল্পনা চলছিল তখন থেকেই। অবশেষে জল্পনার অবসান, খুব শীঘ্রই এই নতুন প্রস্তাব আইনে পাশ করা হবে। বাল্যবিবাহ আইন, হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট এবং স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের সংশোধন করবে কেন্দ্র সরকার। চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই এই নতুন বিল পাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এই ব্যাপারে প্রাক্তন মন্ত্রী জয়া জেটলি নেতৃত্বধিন চার সদস্যের টাস্ক ফোর্স গত জুন মাসে গঠন করেছিল কেন্দ্র সরকার। এছাড়া টাস্ক ফোর্সের সদস্য ছিলেন স্কুল শিক্ষা ও স্বাক্ষরতা মিশন, নারি ও শিশু কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রালয়ের প্রতিনিধিরা। তবে নতুন আইনের ফলে কম বয়সি মেয়েদের বিয়ে কতখানি আটকানো যাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাদের মতে গ্রামাঞ্চলের দিকে এখনও বহু বাল্য বিবাহের মতো কাজ হয়, অনেক সময় প্রশাসনের সহায়তাই বিবাহ রোখাও সম্ভব হয়।
টাস্ক ফোর্সের সুপারিশে জয়া জেটলি বলেছিলেন, “মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য তাদের বিয়ের বয়স বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি, এছাড়া এটি লিঙ্গ বৈষম্য আনার জন্য ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স সমান হওয়া উচিত। তাছাড়া ছেলেরা উচ্চশিক্ষাই বেশি যায় আর মেয়েরা যেতে পারে না কারণ তাদের বিয়ের বয়স ১৮ বলে অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ির চাপে তাদের বিয়ে করতে হয়”। ২০২০ সালের ১৫ই আগস্ট দিল্লির লাল কেল্লাই স্বাধীনতার ভাষণ দিতে উঠে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলে, “ কন্যা সন্তানদের পুষ্টির জন্য সরকার চিন্তিত, তাদের অ
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে কম বয়সে মেয়েরা অন্তঃসত্বা হয়ে পরলে সন্তান এবং মা উভয়েরই শারীরিক ক্ষতি হয়। অনেক ক্ষেত্রে মা এবং সন্তানের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। তাই বিয়ের বয়স বাড়ালে সেই সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে দেখা গেছে এই প্রথম দেশে কন্যা সন্তানের হার বেশি। এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে আমাদের সমাজ পুরনো বদ্ধমূল ধ্যান ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পেড়েছে। তবে বিয়ের বয়স পিছিয়ে যাওয়াই বাল্য বিবাহের পরিমাণ যে কমে যাবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। শিশু ও মহিলা অধিকার বিশেষজ্ঞদের মতে এর ফলে লুকিয়ে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।