#Pravati sangbad Digital Desk:
(দ্বিতীয় পর্ব- সাহিত্য যোগ)
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু স্বামীজির বানীতে প্রবলভাবে আকর্ষিত হয়েছিলেন এবং তিনি নিজের জীবনের ৯০% ভাগ ক্ষেত্রেই স্বামীজির বানী অনুসরণ করেছেন। এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক রোমাঁ রোলাঁ বলেছেন, ‘তাঁর কথাগুলো সঙ্গীতের মতো ছিল; বাক্যাংশের বিন্যাস ছিল বীঠোফেনের মতো, আর হ্যান্ডেলের কোরাসের মতো প্রাণমাতানো ছন্দ। তাঁর এইসব কথা ছড়িয়ে আছে ত্রিশ বছর আগে লেখা বইগুলোর মধ্যে। কিন্তু তবুও যখনই আমি সেগুলি পড়ি, আমার সারা শরীর দিয়ে যেন চকিতে তড়িৎস্পর্শের মতো শিহরণ বয়ে যায়। তাহলে কথাগুলো যেসময়ে এই বীরের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল, সেই মুহুর্তে কী শিহরন, কী উন্মাদনাই না সৃষ্টি করেছিলো।‘
নেতাজি প্রথম স্বামীজির বানীর সঙ্গে পরিচিত হন ১৯১২ সালে। তাঁর বাড়ির পাশে এক আত্মীয় থাকতেন, তাঁর বাড়িতে গিয়ে এই বই ওই বই দেখতে দেখতে সুভাষ বিবেকানন্দ রচনাবলী দেখতে পান এবং সংগ্রহ করে এনে সেই বই আত্মস্থ করতে থাকেন। নেতাজী নিজে তাঁর আত্মকাহিনীতে প্রকাশ করেছেন, তাঁর স্কুলের শিক্ষক তাঁর মধ্যে নীতিবোধ এবং সৌন্দর্য জাগ্রত করলেও, স্বামিজির বানীই নেতাজির সমগ্র সত্তাকে জাগ্রত করতে সাহায্য করেছেন। এই রচনাবলী পরে নেতাজির মনে স্বামীজির একটি বানী খুব দৃঢ়ভাবে দাগ কেটেছিল। বানীটি হল, ‘আত্মেনো মোক্ষার্থং জগদ্ভিতায়’ অর্থাৎ তোমার নিজ মুক্তি ও মানবসেবা এই হবে জীবনের লক্ষ্য। স্কুলে পড়াকালীন নেতাজী বিপ্লবের জন্য নিজেকে তৈরি করা শুরু করেন। স্বামীজির রচনাবলী পড়তে পড়তে নেতাজী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সম্পর্কে জানতে শুরু করেন। তাঁর স্কুলে তিনি তাঁর নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে রামকৃষ্ণদেব এবং স্বামীজির বানী নিয়ে আলোচনা করতেন। তবে এরই মধ্যে তিনি দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে নিজেকেও তৈরি করছিলেন।